মানসিক রোগসমূহের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে অনেকেই জানে না।প্রতিটি মানুষের দুইটি সমস্যা হতে পারে একটি মানষিক অন্যটি শরীরিক। সাধারণত মানুষের শারীরিক সমস্যা সহজে দেখা যায়। কিন্তু মানষিক সমস্যা গুলো সেই ভাবেদেখা যায় না ।এর জন্য অনেক রোগী এর চিকিৎসা করায়না। ফলে সংসার জীবনে নানা ধরনের অশান্তির মধ্যে দিন কাটায়। একজন শারীরিক রোগীর চায়তেও মানষিক রোগী বড় সমস্যা। মানষিক রোগ প্রথম দিকে ধরা পড়লে এবং এর সঠিক চিকিৎসা করলে সেরে উঠা সম্ভব। একজন ব্যক্তির বিভিন্ন কারণে মানষিক রোগ হতে পারে।মানসিক রোগসমূহের লক্ষণ জানা থাকলে চিকিৎসা করা সহজ।

মানসিক রোগসমূহের লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে নিন
আমরা অনেকেই মানষিক রোগের কারণ জানি না। আর এটি জানা থাকলে একজন ব্যক্তির জন্য এই রোগের প্রতিকার করা সম্ভব। প্রতিটি মানুষ চায় শরীরিক ও মানষিক সুস্থ হয়ে বাচতে। শরীর অসুস্থ হলে যেমন ভালো লাগে না তেমন মানষিক অসুস্থ হলে ও ভালো লাগে না। মানুষের সমস্ত রোগের ৫০ ভাগ রোগই মনষতাত্বিক। মন দ্বারা মানুষের শরীর প্রভান্তি। তাই মন ভালো থাকলে শরীর ও ভালো থাকে। যেনে নিই কিছু মানসিক রোগসমূহের লক্ষণ ও প্রতিকার।
উন্মাদ বা পাগলামী রোগ:
স্বাভাবিক অবস্থায় কোন ব্যক্তির মাঝে এটি পরিলক্ষত হলে সেই ব্যক্তির শরীর ও মন মোটেই সুস্থ থাকে না। তার কোন কাজে মন বসে না।সে সবসময় অন্যমনস্ক হয়ে যায়, কারণে অকারণে হাসে বা কাঁদে। সেই ব্যক্তির কাজ কর্ম পড়ালেখায় একটুও মন বসে না। সে সবসময় নিজেকে বড় মনে করে। এমনটা হলে রোগীর চরম পাগলামীর প্রকাশ ঘটে।
রোগের কারণ:-
ক.সাধারনত পারিবারিক অশান্তি, সামাজিক নিরাপত্তাহিনতা প্রভৃতি কারণে এই ধরনের রোগ হতে পারে।
খ অধিক সময় ধরে শারীরিক অসুস্থ হলে।
গ অনেকের বংশগত কারণেও এই রোগ হতে পারে।
ঘ মানসিক সমস্যার বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা এবং দ্বিধা ঘন্দ থেকে এই রোগের উৎপত্তি হতে পারে।
ঙ রোগী সাধারনত নিজে নিজে কখনও হাসে আবার কখনও কাঁদে।
চ এই রোগের মানুষের মন স্থির থাকে না ফলে চিন্তা ধারা খুব তাড়াতাড়ি চলে। এর ফলে এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে হঠাৎ চলে যায়।
ছ এদের কোন যৌন ইচ্ছা থাকে না, কিন্তু শক্তি কম হয়।
জ এদের ঘুম হয় তবে ক্ষণস্থায়ী।
ঝ রোগীর অস্থিরতা বেড়ে যায় অনেক।
ঞ এই রোগীর আত্মহত্যার প্রবণতা থাকে না।
রোগীর খাবার ও চিকিৎসা:-
ক অবস্যাই এদের অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে এবং প্রয়োজন হলে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে।
খ প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া মনোমালিন্য হয়। তবে এটি সবসময় স্থীর হওয়া যাবে না ।পারিবারিক কোলহ মানষিক রোগের অন্যতম কারণ। তাই এ কোলহ থেকে দূরে থাকুন।
গ একজন মানসিক রোগীর ভাল হতে তার পরিবারের ভূমিকা অনেক। তার পরিবারের সহযোগিতার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। পরিবার থেকে চিকিৎসা ভালো হলে রোগীর জন্য সেরে উঠা সহজ।
রোগের কারণ:-
ক সাধারনত দ্বন্দবহুল কলহময় পারিবারিক অশান্তি,এবং সামাজিক নিরাপত্তাহিনতা প্রভৃতি কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
খ ব্যক্তিগত মানসিক সমস্যার কারণে ও বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা এবং দ্বিধা দ্বন্দ থেকে এই রোগের উৎপত্তি হতে পারে।
গ কিছু কিছু পরিবারের মধ্যে অনেকের মানষিক সমস্যা দেখা যায়। তাই বংশগত কারণেও এই রোগ হতে পারে।
ঘ দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যার কারণেও এই রোগ হতে পারে।
রোগের লক্ষন সমূহ:-
ক রোগীর মনে চঞ্চলতা, প্রলাপ বকা ও আক্রমনাতক আচরণ প্রভৃতি উপসর্গসহ জিনিসপত্রের ক্ষতিসাধন বা ভাঙচুর করার মনভাব থাকে।
খ এই ধরনের রোগীরা চুপ হয়ে যায়। কখনো ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করে না। এবং একা একা বির বির করে কথা বলে কিংবা অকারণে নিজে নিজে হাসতে থাকে।
গ সাধরনত বিষণ্ণ ভাব, কিছু ভাল না লাগা, অস্থিরতা, অনিদ্রা বেশি দেখা যায়।
আর ও পড়ুন-অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণ –স্বামীকে সুখে রাখার টিপস
এদের খাবার ও চিকিৎসা:-
ক অবস্যাই এদের অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে এবং প্রয়োজন হলে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে।
খ একজন মানসিক রোগীর ভাল হতে তার পরিবারের ভূমিকা অনেক। তার পরিবারের সহযোগিতার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। পরিবার থেকে চিকিৎসা ভালো হলে রোগীর জন্য সেরে উঠা সহজ।
গ প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া মনোমালিন্য হয়। তবে এটি সবসময় স্থীর হওয়া যাবে না ।পারিবারিক কোলহ মানষিক রোগের অন্যতম কারণ। তাই এ কোলহ থেকে দূরে থাকুন।
তাছাড়া বাবা মার উচিত তাদের সন্তানদের সাথে সবসময় বন্ধু সুলভ আচারণ করা।
মানসিক অবসাদ:-
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগ।বিভিন্ন মানসিক আঘাতের পর অথবা অনেক সময় আপনা আপনি এই রোগ হয়ে থাকে। এই রোগটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা রোগ যা মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
এই রোগের কারণ:-
ক সাধারণত কোন কিছু পাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রমের পর সফল না হলে মানুষিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে।
খ এই রোগ দেখা যায় বড় কোনো মানসিক আঘাতের কারণে হতে পারে।
গ অনেক সময় প্রেমে ব্যার্থ হলে নিজেকে স্থির রাখতে পারে না ফলে এই রোগ হতে পারে।
ঘ অতিরিক্ত আবেগপ্রবন মানুষ সামান্য কষ্ট পেলেও এই সমস্যা হতে পারে।
রোগের লক্ষন সমূহ:-
ক যেহেতু নিজে অনেক পরিশ্রম করার পরের ও সফল হওয়া যায় নি এই জন্য সব কাজেই নিজেকে দোষী মনে করে।
খ রোগীর সবসময় মন মরা ভাব থাকে।
গ এরা সধারনত কোলহলের মধ্যে না থেকে একা থাকতে ভালবাসে।
ঘ এরা নিজেরা সামান্য কারণকে বড় করে দেখে, আর অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে।
ঙ সব সময় চুপ থাকতে চায় ফলে কম কথা বলে।
চ কিছু কিছু সময় এদের আত্মহত্যার প্রবল বাসনা দেখা যায়।
চিকিৎসা:
ক এই ধরনের রোগীকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে হবে। তার কারণ সে যে সফল হতে পারিনি এটা তার মাথায় যেন না আসে। তাছাড়া একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর কাছে চিকিৎসা নিতে হবে।
খ পৃথিবীতে সবাই সফল হয়না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতা মেনে নিতে হয় । আর এই জন্য পরিবার বা কাছের মানুষকে পাশে দাঁড়াতে হবে এবং সান্তনা দিতে হবে।
গ তার পছন্দ অনুযায়ী সবধরনের খাবার নিয়মিত খেতে দিতে হবে।
মানসিক রোগের কারণ
অনিদ্রা বা নিদ্রাহীনতা বোধ করা :-
মানুষ সুস্থ থাকতে তাকে পরিমিত ঘুমাতে হবে। সাধানত যখন স্বাভাবিক ভাবে ঘুম হয় না তখন তাকে অনিদ্রা বা নিদ্রাহীনতা বলে। আর এটি যেকোনো বয়সের লোকেরই হতে পারে। একজন মানুষের বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রোগের কারণ:-
ক রোগী সবসময় অতিরিক্ত চিন্তা বা উন্মাদনা ও উত্তেজনা হয়।
খ এটি একটি মানুষিক রোগ।
গ ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদের কারণে হয়।
ঘ দেহের নানা বিধ সমস্যার কারণে (ব্যথা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি) নিদ্রাহীনতা হতে পারে।
রোগের লক্ষন সমূহ:-
ক বিছানায় ঘুমাতে গেলেও অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয় ঘুম আসেনা।অনেক চেষ্টা করলেও ঘুম ঠিকমত আসেনা।
খ ঘুম না হলে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়।
গ রাত্রে ঘুম না হলে এদের মেজাজ খিটখিটে হয়।
ঘ রোগীর খাবারের প্রতি কোন রুচি থাকে না।
ঙ নিজেকে সর্বদা শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করে।
এদের চিকিৎসা:-
ক সম্ভব হলে কায়িক পরিশ্রম করা। কারণ শরীর ক্লান্ত হলে সাধারনত ঘুম ভালো হয়। তাছাড়া মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া।
খ তাকে অ্যালকোহল, ধূমপান ও মাদক সেবন থেকে বিরত করতে হবে।
গ ক্যাপেইন জাতীয় খাদ্য বিশেষ করে চা বা কফি খাওয়া যাবে না।
ঘ উত্তেজনা বা উদ্বেগের কাজ থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে।
ঙ ঘম আসেনা কেন এ নিয়ে সবসময় অতিরিক্ত চিন্তা করা যাবে না।
মৃগীরোগ:-
হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সঙ্গে হাত, পা ও সারা শরীরের মাংসপেশী সজোরে সংকোচিত করার নাম এপিলেপসি বা মৃগীরোগ। এই রোগ সাধারণত অল্প বয়সে শুরু হয়।
রোগের কারণ:-
এই রোগের প্রকৃত কোনো কারণ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর এটি একটি দীর্ঘকালের স্থায়ী ব্যাধি।
ক এ রোগে আক্রমণ হলে কেউ কেউ চিৎকার করে আবার কেউ কেউ না করে মাটিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।
খ রোগীর সমস্ত শরীর খিচে ধরে এবং পরে শক্ত হয়ে যায়।
গ এদের পা শক্ত হয়ে পড়ে,এবং ঘাড় একদিকে কাত হয়ে যায়।
ঘ রোগীর দেহ শক্ত হয়ে পড়ে,তাছাড়া এই অবস্থায় ২০/৩০ মিনিট থাকার পর রোগী জ্ঞান হারায়।
খাবার ও চিকিৎসা:-
ক একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই রোগের চিকিৎসা করাতে হবে।
খ এদেরকে সবধরনের স্বাভাবিক খাবার নিয়মিত খেতে দিতে হবে।
গ রোগীকে নিয়মিত ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ঘ এই রোগের বড় সমস্যা পানি । এর সবসময় পানির দিকে যেতে চায় তাই রোগীকে পানি ও চলাচলে সাবধান থাকতে হবে।
ঙ রোগীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা উচিত ।
আরো কিছু পোস্ট আপনার জন্য প্রয়োজনে দেখতে পারেন
ঢেঁড়সের পানীয় রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকারী
https://www.latestbangla.com/archives/3520
ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করবেন সচেতন হোন খুব সহজেই?
https://www.latestbangla.com/archives/3515
পাইলস রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে নিন
https://www.latestbangla.com/archives/3512
পান খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন এক ঝলকে?
https://www.latestbangla.com/archives/3414
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। প্রতিদিনের আপডেট পেতে আমাদের Facebook লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন।
ধন্যবাদ।