বান্দরবান শহর থেকে চান্দের গাড়িতে সাংকিংপাড়ার প্রথম স্টেশনে পৌঁছাতেই সূর্য পশ্চিমের আকাশে প্রায় হেলে পড়েছে। এখন পুরোটাই হাঁটাপথ, গন্তব্য একটি খুমিপাড়ার কার্বারির বাড়ি। উঁচু পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ওঠা ও নামা। পাহাড়ের ঢালে হাঁটার সময় সূর্য কখনো আবডালে হারিয়ে যায়, আবার কখনো ধরা দেয়। এক আলোছায়ার দৃশ্য।

সাংকিংপাড়ার বনের অপরূপা অর্কিড
পাহাড়ি বৃক্ষের ঝরাপাতায় ছেয়ে আছে পাহাড়ের গা। কখনো হাঁটতে হয়েছে পাতা সরিয়ে সরিয়ে। কাঁধে ব্যাকপ্যাক ও লাঠি হাতে পাহাড়ি পথে হাইকিং রোমাঞ্চকর ও চ্যালেঞ্জিং। সেই বিকেলে মৃদু বাতাস ছিল পাহাড়ে। চারদিক থেকে বাতাসে কুরচিসহ নানান ফুলের সৌরভ ভেসে আসছিল। বনপথে পথিকের ক্লান্তি দূর করে দেওয়ার জন্য বনফুলের এমন আয়োজন!
অজানা বৃক্ষের ছায়াতলে মাঝেমধ্যে আমাদের বিরতি দিতে হয়েছে। দীর্ঘ সে চলার পথে শুনেছি চেনা-অচেনা পাখির গান। দেখেছি নানান বুনো ফুল ও পাহাড়ি মানুষের হাসি। সেসব বুনো ফুলের মধ্যে ছিল এক অপরূপা উজ্জ্বল সোনালি-হলুদ রঙের অর্কিড। একটি বৃক্ষের কাণ্ডে জন্মেছে সে। উঁচু বৃক্ষের কাণ্ডে জন্মানো এই অপরূপা অর্কিড ফুলের সৌন্দর্য ছুঁয়ে দেখার উপায় নেই। চোখে দেখেই প্রাণ জুড়াতে হলো সেদিন।
সুন্দর এই অর্কিড ফুলের ইংরেজি নাম গোল্ডেন বো। বাংলায় অনুবাদ করলে হয় সোনালি ধনুক। আমাদের পাহাড়ের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরা তাকে কী নামে ডাকে, জানা যায়নি। জানা নেই কোনো প্রচলিত বাংলা নাম। ভারত, মিয়ানমার, চীন, ভুটান, নেপাল, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস ও আন্দামান দ্বীপের প্রাকৃতিক বনেও জন্মায় এটি। ফুলের রূপ আকর্ষণীয় হওয়ায় এর বাণিজ্যিক চাষ হয় অনেক দেশে। বনের আবহ দিয়ে বাড়ির বারান্দায় রাখেন শৌখিন অকির্ডপ্রেমীরা, বিশেষ করে থাইল্যান্ডের অধিবাসীরা।
পাহাড়ি বনের ৭০০ থেকে ১ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় জন্মে এই অর্কিড। এটি শীতল ও উষ্ণ আবহাওয়া পছন্দ করে। উদ্ভিদ বৃক্ষাশ্রয়ী বীরুৎ। কাণ্ড মেকিকন্দ, খাড়া, খাঁজযুক্ত ও ২ থেকে ৫টি পর্বমধ্য থাকে। ৬-৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পরিণত কাণ্ড সোনালি-হলুদ। পাতা ২ থেকে ৫টি। ডিম্বাকার-বল্লমাকার, আগা চোখা। পুষ্পমঞ্জরি প্রায় প্রান্তীয়, একাধিক পুষ্প ঝুলে থাকে তাতে। ফুল সোনালি-হলুদ, মাঝখানের অংশ গাঢ় সোনালি এবং দাগযুক্ত। বৃতি সমরূপ ও আয়তাকার। শীতের সময় পাতা থাকে না। বসন্তে পাতা আসে এবং তার কিছুদিন পর কলি আসে। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল থেকে জুলাই। ফুল সুগন্ধি। বনের মৌটুসি পাখিরা ফুলে বিচরণ করে। অনেক দিন ফুল তাজা থাকে।
আমাদের চিরহরিৎ অরণ্যের এ উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Dendrobium chrysotoxum। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার ঘন অরণ্যে এই অর্কিড পাওয়া যায়। বাংলাদেশ জাতীয় হার্বেরিয়ামের গবেষণা অনুসারে এটির বর্তমান অবস্থা দুর্লভ। পোষক গাছ কাটা এবং এক বনের পরিবেশ থেকে অতিরিক্ত আহরণের কারণে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে প্রজাতিটি।
সৌন্দর্যশোভার কারণে বিশ্বে অর্কিড তুমুল জনপ্রিয় একটি ফুল। অর্কিড নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। দেশের বনের অর্কিড প্রজাতিগুলো রক্ষা করার জন্য সরকারের গবেষণা ও সংরক্ষণ প্রকল্প নেওয়া উচিত। গবেষণা করে প্রজাতিগুলোর বাণিজ্যিক চাষ, উদ্যানতাত্ত্বিক গুরুত্ব ও উপযোগিতা যাচাই করা দরকার।
সূত্র : প্রথমআলো
মামলার বাদীর পরিচয় নিশ্চিতে হাইকোর্টের ৫ নির্দেশনা
প্রচার শুরুর আগেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে যে উপনির্বাচন
সুইজারল্যান্ডে এমপি হলেন বাংলাদেশি সুলতানা খান
একা ঘরে হাউমাউ করে কাঁদছি, কী উত্তর দেব মুখ্যমন্ত্রীকে :পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়?
একা ঘরে হাউমাউ করে কাঁদছি, কী উত্তর দেব মুখ্যমন্ত্রীকে :পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়?
স্ট্রাইকারের কি অভাব পোড়াচ্ছে আর্জেন্টিনাকে?
https://www.latestbangla.com/?p=3934
স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিশেষ বৃত্তিসহ ছয় দফা দাবি
স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিশেষ বৃত্তিসহ ছয় দফা দাবি
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। প্রতিদিনের আপডেট পেতে আমাদের Facebook লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন।
ধন্যবাদ।
Icon for this message
Latestbangla.com
News & Media Website