Friday , 29 March 2024

বিবাহিত জীবনে সন্তান না হলে কী করবেন?

সন্তানের আশা প্রত্যেক বিবাহিত নর-নারী করে থাকে।মা ডাক শুনতে যেমন নারীর ইচ্ছা হয় তেমনি পুরুষেরও ইচ্ছা হয় বাবা ডাক শুনতে।বিবাহিত দাম্পত্য জীবনে সন্তান না হওয়ার অনেক ধরণের কারণ থাকতে পারে। সেটা অনিচ্ছা, দম্পতির মতের মিল অমিল এবং তবে সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে শারীরিক অক্ষমতার কারণ। তবে চেষ্তাটা না করে শুধু ভাগ্যের দোহাই দিয়ে কাটালে হবে না। যদি বোঝেন সন্তান না হওয়া অবশ্যম্ভাবী, তাহলে মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়াই শ্রেয় বলে বিবেচিত। মরে রাখবেন সন্তান না হওয়া মানেই দাম্পত্য জীবনের শেষ তা নয়! সন্তান ছাড়াই আপনি আপনার অর্ধাঙ্গীর সাথে জীবন কাটাতে পারেন। তবে এটি একটি মানসিক যন্ত্রনাও বটে,তাই এই ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিবেশের সাথে মানিয়ে আপনি কিছু জিনিস অনুসরণ করতে পারেন।

১। আপনার অনুভূতি গুলো ব্যক্ত করুন:
যখন আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তান আসছে না, তাহলে সবার আগে যে কাজটি করণীয় সেটা হচ্ছে আপনার ভেতরে যদি কোন হতাশা, ক্রোধ, দুঃখ থেকে থাকে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুন। মনে রাখবেন, এই কাজটি একবারই করবেন। বার বার যেন আপনার জীবনে চলার পথে এসব জিনিস বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে। দরকারে আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিন। তার সাথে আপনার অনুভূতি শেয়ার করুন।

২। বাস্তবতাকে মেনে নিন:
যখন ভেতরের সব হতাশা, ক্রোধ, দুঃখ নিঃশেষ হয়ে যাবে তখন মাথা ঠান্ডা করুন। তারপর ব্যাপারটির গভীরতা চিন্তা করুন। তারপর বাস্তবতা মেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। কি হতে পারতো কিংবা কি হয় নি সেগুলো চিন্তা না করে বর্তমানে কি হচ্ছে সেদিকে নজর দিন। তারপর সন্তান ছাড়া আপনার ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে সেটা ভাবুন এবং ঠিক সেইভাবে প্রস্তুতি নিন। আর একটা ব্যাপার, যদি সন্তানের জন্য কোন ধরণের খেলনা বা অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে থাকেন সেগুলো প্যাক করে দূরে সরিয়ে দিন। সবচাইতে ভালো হয় যদি জিনিসগুলো এমন কাউকে দিয়ে দিন যার কাজে লাগতে পারে।

৩। আপনার শরীরের খেয়াল রাখুন:
যেটা হয়েছে সেটা হয়েছেই। তার জন্য নিজের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার মানে নেই কোন। আর মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য সুস্থ শরীর প্রয়োজন। তাই এইসময়ে নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত ঘুমান, ঘুম না আসলে হালকা ডোজের ঘুমের ওষুধ নিন। তার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া করুন, মানসিক চাপ কমানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।

৪।নেতিবাচক আবেগ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখুন:
এই ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে হতাশা ঘিরে ধরবে এইটাই স্বাভাবিক। তাই আগে থেকে সাবধান করুন। দাম্পত্যের শুরুতে বা মাঝামাঝি হতাশা ঘিরে ধরলে অনেক বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কখনো ভাববেন না আপনি ব্যর্থ। কেবল মাত্র সন্তান হলেই সফল হবেন এই ধরণের চিন্তা ভাবনা মাথায় আনার মানে নেই। তার পাশাপাশি রাগ, ভয় এই ধরণের অনুভূতিগুলোও সরিয়ে রাখুন। কারণ রাগের মাথায় নেয়া কোন সিদ্ধান্তই কখনো ভালো হয় না। এছাড়া ইনসোমনিয়া, অরুচি, মাথাব্যাথা এই ধরণের শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারে শরণাপন্ন হোন।

৫। বন্ধু বান্ধবের সাথে বেশি সময় কাটান:
আপনার এই সময়টাতে বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে সময় কাটানো অনেকটাই জরুরী। এতে আপনার মধ্যে থাকা একাকীত্ব, হতাশাজনক অনুভূতিগুলো অনেকাংশেই কমে যাবে। যদি মনে হয় আপনি আর নিতে পারছেন না তাহলে সবার সাথে মেশার পাশাপাশি মেন্টাল কাউন্সেলিং করাতে পারে। চাইলে ধর্মীয় অনুশাসনও মানতে পারেন। এতে আপনার ভেতরে প্রশান্তি আসবে।

৬।সামর্থ্য থাকলে সন্তান দত্তক নিন:
ন্তান জন্ম দিলেই পিতামাতা হওয়া যায় এমন ভাবার কোন কারণ নেই। যদি আপনি প্রস্তুত থাকেন এবং আপনার সঙ্গী আপনার সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করে তাহলে অনাথ শিশুদের প্রতিষ্ঠান থেকে সন্তান দত্তক নিতে পারেন। তবে যদি তা না চান তাহলে শিশুদের কাছাকাছি থাকার আরো পথ আছে। আপনার বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনের বাচ্চাদের সাথে সময় কাটান, কিংবা এমন কোথাও কাজ করতে পারেন যেখানে শিশুদের সরাসরি যোগাযোগ আছে। যেমন – কিন্ডারগার্টেন স্কুল, শিশু বিষয়ক সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

৭। নিজেকে সময় দিন:
যদি সন্তান নেয়ার ব্যাপারটা না ঘটে, তাহলে নিজেকে সময় দিন। আপনার ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিতে পারেন। আপনি গৃহিণী হলে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনলাইন বুটিক হাউজ, কেক শপ এই ধরণের। এতে আপনি ব্যস্ত থাকবেন, আর আপনার নিজের একটি ক্যারিয়ারও হবে।

একথা সবাই বোঝে যে সন্তান জন্ম না দিতে পারা একটি দুঃখের বিষয়।তবে তাই বলে নিজের জীবন এইজন্য ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়ার কোন মানে নেই। আত্মবিশ্বাস আনুন,নিজেকে শক্ত করুন । সঙ্গীর সাথে সুখী জীবনযাপন করুন।

আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোন সমস্যার জন্য এখানে কমেন্ট করে জানান।তাছাড়া অপনারা কোন ধরণের পোষ্ট চান তাও জানাতে ভুলবেন না।ধন্যবাদ

Spread the love

Check Also

ছেলে মেয়ের শুধু বন্ধুত্ব

ছেলে মেয়ের শুধু বন্ধুত্ব

শায়লা আর মারজুক একসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে পড়েন । তাঁদের দুজনের বাসাও কাছাকাছি । প্রায়ই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *